Monday, September 23, 2024

৩ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন অনূঢ়া, এবার তিনিই বসলেন শ্রীলঙ্কার মসনদে

শ্রীলঙ্কার সাম্প্রতিক নির্বাচনের পর যদি অনূঢ়া (Anura Kumara Dissanayake) ৩ শতাংশ ভোট পেয়ে থাকেন এবং পরে তিনি রাষ্ট্রপ্রধান হন, তাহলে এর পেছনে রাজনৈতিক জোট, সমঝোতা বা বিশেষ ধরনের পরিস্থিতি থাকতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে, একটি নির্বাচন সরাসরি প্রার্থী নির্বাচন করার পরিবর্তে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে জোট গঠনের মাধ্যমে সরকার গঠিত হতে পারে। 


এই পরিস্থিতিতে, অনূঢ়া হয়তো সরাসরি ভোটের মাধ্যমে উচ্চ সমর্থন না পেলেও, রাজনৈতিক জোটের সমর্থনে বা বিশেষ পরিস্থিতির কারণে শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপ্রধান হতে পারেন। শ্রীলঙ্কার রাজনীতিতে সাম্প্রতিককালে বড় ধরনের অস্থিরতা ছিল, এবং এমন পরিস্থিতিতে জোটবদ্ধ সরকার বা সমঝোতার ভিত্তিতে নেতৃস্থানীয় পরিবর্তন সম্ভব। 


আপনি কি এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত বা নির্দিষ্ট কোনো তথ্য জানতে চাচ্ছেন?


অনূঢ়া কুমারা দিসানায়েক, যিনি শ্রীলঙ্কার একজন প্রখ্যাত বামপন্থী নেতা, ১৯৬৮ সালের ২৪ নভেম্বর শ্রীলঙ্কার মধ্যাঞ্চলীয় গালেওয়ালা শহরে জন্মগ্রহণ করেন। গালেওয়ালা শহরটি তার সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য এবং ধর্মীয় সহাবস্থানের জন্য পরিচিত। অনূঢ়ার বেড়ে ওঠা এই বৈচিত্র্যময় পরিবেশে তার রাজনৈতিক ও আদর্শিক চিন্তাধারার বিকাশে ভূমিকা রেখেছে। 


তিনি **জনতা বিমুক্তি পেরামুনা** (JVP) বা "পিপলস লিবারেশন ফ্রন্ট" দলের নেতা, যা শ্রীলঙ্কায় একটি বামপন্থী রাজনৈতিক দল হিসেবে পরিচিত। JVP শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি সক্রিয় এবং ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ দল। ১৯৭০-এর দশকে শুরু হওয়া এই দলটি মূলত শ্রীলঙ্কার বামপন্থী আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয় এবং বিভিন্ন সময়ে সরকারের বিরোধিতা করে আসছে। অনূঢ়া নিজে ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে এসেছেন এবং তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই তিনি সমাজতন্ত্র ও বামপন্থী আদর্শের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ ছিলেন।


গালেওয়ালার মতো ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিকভাবে বৈচিত্র্যময় শহরে বড় হওয়া তাকে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি ও সম্প্রদায়ের সঙ্গে কাজ করার দক্ষতা প্রদান করেছে, যা তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।


অনূঢ়া কুমারা দিসানায়েক নিজেকে শ্রীলঙ্কার প্রচলিত রাজনীতির বাইরে একজন "ভিন্ন" নেতা হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারকালে তিনি শুধু শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক ও সামাজিক সমস্যার কথা বলেননি, বরং দেশের সাম্প্রতিক ইতিহাসের ভয়াবহ ঘটনাগুলোর প্রতিও মনোযোগ আকর্ষণ করেছেন। এর মধ্যে অন্যতম হলো ২০১৯ সালের ইস্টার সানডে বোমা হামলার ঘটনা।


২০১৯ সালের ২১ এপ্রিল শ্রীলঙ্কার বিভিন্ন চার্চ এবং হোটেলে সংঘটিত এই ভয়াবহ বোমা হামলায় ২৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয় এবং শত শত মানুষ আহত হয়। এই ঘটনা দেশের মধ্যে একটি বড় ধরনের আতঙ্ক তৈরি করে এবং তা শ্রীলঙ্কার নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা এবং সাম্প্রদায়িক সহিংসতার দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে। 


অনূঢ়া দিসানায়েক এই ঘটনার জন্য দেশের তৎকালীন রাজনৈতিক নেতৃত্বের সমালোচনা করেছেন এবং তাদের ব্যর্থতার জন্য দায়ী করেছেন। তিনি মনে করেন, শ্রীলঙ্কার জনগণকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য যে দায়িত্ব ছিল, তা সঠিকভাবে পালন করা হয়নি। তিনি দেশের নিরাপত্তা, সুশাসন, এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বিষয়গুলোকে তার প্রচারণার কেন্দ্রবিন্দুতে রেখেছিলেন। 


একজন 'ভিন্ন' নেতা হিসেবে তিনি সাধারণ রাজনৈতিক প্রবণতা থেকে সরে এসে জনগণের দুর্দশা এবং বাস্তব সমস্যাগুলোর কথা বলেছেন, যা তাকে শ্রীলঙ্কার প্রচলিত রাজনৈতিক ধারার বাইরে এক অনন্য নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: